উঠে যাচ্ছে মৌজার দরে জমি রেজিস্ট্রেশন ২০২২ Land Registration 2022 is going up at Mauza rate বিদেশে অর্থ পাচার প্রতিরোধে তুলে দেওয়া হচ্ছে ...
উঠে যাচ্ছে মৌজার দরে জমি রেজিস্ট্রেশন ২০২২
Land Registration 2022 is going up at Mauza rate
বিদেশে অর্থ পাচার প্রতিরোধে তুলে দেওয়া হচ্ছে মৌজার দরে জমি রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি, এর বদলে রেজিস্ট্রেশন হবে মার্কেট বেস্ট বাজারভিত্তিক পদ্ধতিতে, অর্থাৎ যে দামে জমি কেনাবেচা হবে, নিবন্ধন আদলে, বাজার মূল্য জমি রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি কার্যক্রম করতে গত রোববার সাত সদস্যের একটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে, কমিটি আগামী পহেলা এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব প্রতিবেদন আর্থিক আইডি সচিব এর কাছে।
সম্প্রতি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোঃ সলিমুল্লাহ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উল্লেখিত কমিটি গঠন করা হয়। ওই বৈঠকে ভূমি মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, নিবন্ধন অধিদপ্তর এবং এনবিআরের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন, উল্লেখ্য, জমি রেজিস্ট্রি স্বচ্ছতা বাজার দায়ী এফ সচিব কে, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
এর আগে একই বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত চারটি বৈঠক করলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি, জমির প্রকৃত ও মৌজা ধরে তারতম্য দুর্নীতিকে উৎসাহিত করে জানিয়ে ২০২০ সালের ২৩শে জুলাই মন্ত্রিপরিষদকে একটি চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক এর বাজার মূল্য নির্ধারণ বিধিমালা সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছিল।
এছাড়া গত ১৫ই জুন সরকারি ক্রয় কমিটির বৈঠকে পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাজধানীর গুলশান এলাকায় জমির যে দাম দেখিয়ে নিবন্ধন করা হয়, প্রকৃত দাম তার চেয়েও বেশি, কিন্তু বেশি দামে তো নিবন্ধন করানো যাচ্ছে না। প্রতিটি মৌজার জন্য দাম ঠিক করে দেওয়া আছে, সুতরাং কালো টাকা, তিনি আরো বলেন বাস্তবতা হচ্ছে যে ফ্লাট দুই কোটি টাকায় নিবন্ধন হচ্ছে, সেটির প্রকৃত দাম দশ কোটি টাকা, ফলে সরকার বাড়তি নিবন্ধন ফি নিতে পারছেন না, ঢাকা শহর যার জমি/ফ্লাট আছে তারা অর্থাৎ শুধু জমির ক্রেতা এবং বিক্রেতা ই বলতে পারেন জমির বাজার দর কত।
সূত্রমতে জমি রেজিস্ট্রেশন এর ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে বাজারভিত্তিক জমির নিবন্ধন মূল্য বাস্তবায়নে গঠিত উপ-কমিটি আহ্বান ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্মসচিব কেন্দ্রীয় ব্যাংক রুকসানা হাসিন এবং সদস্য সচিব উপসচিব কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোঃ জিহাদ উদ্দিন, অন্য সদস্যরা হলেন ভূমি মন্ত্রণালয় লজিস্টিক ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বিএফআইইউ নিবন্ধন অধিদপ্তর এর প্রতিনিধি।
গঠিত কমিটিতে প্রয়োজনীয় সব তথ্য উপাত্ত প্রেরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিবন্ধন অধিদপ্তর, বিএফ আই ইউ, জমি রেজিস্ট্রেশন এর ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও রাজস্ব বাড়াতে বাজারভিত্তিক মূল্য জমির নিবন্ধন পদ্ধতি বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব সহ প্রতিবেদন তৈরি করবেন।
নিবন্ধন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ অর্থবছরের সারাদেশে জমি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ৩২ লাখ ১৩ হাজার ৫২৪, এই নিবন্ধন থেকে সরকার বছরে ৬০ হাজার থেকে 8 হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে, সংশ্লিষ্টদের মতে বাজার মূল্য পদ্ধতি করা হলে এ খাত থেকে সরকারের আয় বেড়ে দ্বিগুন এর কাছাকাছি হবে।
উঠে যাচ্ছে মৌজার দরে জমি রেজিস্ট্রেশন জানতে চাইলে অর্থনীতিবীদ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখার আলম সোমবার যুগান্তরকে বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ ক্ষেত্রে জমির মূল্য বিক্রি হয়, তা নিবন্ধন নিবন্ধনে দেখান হয়, এতে এক হাতে কালো টাকার সৃষ্টি হয়, পরে তারা বিদেশে পাচার করা হয়, এ অবস্থায় মৌজা অনুসারে জমির দাম তুলে দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক, এতে বিদেশে অর্থ প্রতিরোধ, তবে তার মতে অর্থ পাচার সবচেয়ে বেশি হয় বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে, আমদানি রপ্তানিতে জালিয়াতির মাধ্যমে এসব অর্থ পাচার হয়ে থাকে।
উঠে যাচ্ছে মৌজার দরে জমি রেজিস্ট্রেশন এটি বন্ধ করা জরুরি তিনি বলেন বাড়ালেই অর্থ পাচার বন্ধে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে!
জানা গেছে বর্তমানে মৌজা রেট অনুযায়ী সারাদেশে জমি বেচা-কেনা এবং নিবন্ধন হচ্ছে মজাদার হচ্ছে জমির সর্বনিম্ন একটি দল, অর্থাৎ মৌজা দরের চেয়ে কম দেখিয়ে কেউ জমি বেচাকেনা করতে পারবেনা মৌজার নির্ধারণের কাজ হয় সর্বনিম্ন বাজারমূল্য বিধিমালা অনুযায়ী সারাদেশে বিভিন্ন এলাকায় মৌজা দর সর্বশেষ নির্ধারণ করা হয় ২০১৬ সালে এখনো সেই দলের নিবন্ধন চলছে সেই হিসেবে ঢাকার গুলশান কার্যালয়ের অধীনে ১৪ মৌজা ধরনের জমি আছে মজাদার অনুযায়ী ধরনভেদে এলাকায় ১ শতাংশ জমির দাম ১ লাখ থেকে ৫৮ লাখ টাকা, কিন্তু এক কোটি টাকার নিচে এক শতাংশ জমি বেচাকেনা হয় না, ধানমন্ডি ১ শতাংশ জমির দাম ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০০ টাকা কিন্তু বাস্তবে ধানমন্ডিতে এই দামে জমি বেচাকেনা হয় না।
এই জমি রেজিষ্টেশনের অন্তরালে এক ধরনের কৌশল অবলম্বন করা হয়। বিশেষ করে বেশি মূল্য কম দেখিয়ে নিবন্ধন করা হচ্ছে, পরে ওই টাকা পাচার করা হয় বিদেশে, এ বিষয়টি উঠে আসে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা এবং অর্থনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির সর্বশেষ বৈঠক, গত ২৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সেখানে তিনি বলেছেন উচ্চমূল্য দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধ হয়, যা কিনা পরে বিদেশে পাচার হয়, কমিটি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনেক বৈঠক করলেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, তিনি আরো বলেন দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধার করে আনার চেষ্টা চলছে পাচার রোধ করা ভালো জমি নিবন্ধন বাজারভিত্তিক হলে মানিলন্ডারিং মুদ্রাপাচার কমে আসবে।
ওই বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বলেছেন, জমির প্রকৃত মূল্য না দেখানোর কারণে অনেক সময় বৈধ-অবৈধ হয়ে যায়, বাজার ভিত্তিক লেনদেনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব।
COMMENTS