সরকারি চাকরি আইন সংশোধন মন্ত্রিসভায় ১২/১২/২০২২ সরকারি চাকরি আইন সংশোধন । তিন বছর আগে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল সরকার। বাস্তবায়ন হয়নি নানা জ...
সরকারি চাকরি আইন সংশোধন মন্ত্রিসভায় ১২/১২/২০২২
সরকারি চাকরি আইন সংশোধন। তিন বছর আগে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল সরকার। বাস্তবায়ন হয়নি নানা জটিলতায় আইনটি পুরোপুরি। আইনের জটিলতাগুলো সংশোধন করে সোমবার মন্ত্রিসভায় তোলা হয়েছে। সরকারি চাকুরী আইন সংশোধন।
স্বশাসিত সংস্থা, এই সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নিয়োজিত ব্যক্তিদের বেতন এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধা নির্ধারণের বিষয়টি স্পষ্ট করা হচ্ছে। আইনের ১ ধারায় কর্মচারী অবসরে গেলে তিনি যেসব সুবিধা প্রাপ্য হবেন, তা নির্ধারণ হওয়ার কথা। কিন্তু ১৭ ধারায় রয়েছে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়। অবসর গ্রহন কারী সরকারি কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫১ ধারাটি হল অবসর সুবিধা স্থগিত প্রত্যাহার ইত্যাদি সংক্রান্ত। এসব বিষয়েও সংশোধন করা হয়েছে।
আজ অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার বৈঠক এ ২০২২ সরকারি চাকরি আইন সংশোধন এ এজেন্ডায় রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে আজ দুপুর ১২ তাই এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবুল কাশেম মোহাম্মদ মহিউদ্দিন গতকাল বলেন, বিদ্যমান আইনের স্ব-শাসিত সংস্থা রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য নয় বলা ছিল। এবার তা পরিবর্তন করে তাদের ওয়াইন এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কারণ চাকরির, বেতন, বয়স, পে স্কেল সহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধার বিষয়টি সবার জন্য একই রকম। এছাড়া কিছু কিছু ভুল ছিল, সেটা সংশোধন করা হয়েছে।
বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আদালতে রিট রয়েছে সরকারি কর্মচারী আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে, সরকারি কর্মচারীদের কোন মামলায় গ্রেপ্তার করার আগে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার যে বিধান ছিল, সেটি বাতিল করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় আপিল বিভাগে স্থগিত করেছে। এ বিষয়ে আপিল বিভাগের শুনানির পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
অভিন্ন প্যাসকেলের জটিলতা কাটছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি চাকরি আইন প্রণয়নের আগে স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্র ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর বেতন ভাতা সংক্রান্ত ১৯৭৫ চাকরি ( পূর্ণগঠন ও শর্তাবলী) আইন বাতিল করা হয়। এর আলোকে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্মচারীদের জন্য অভিন্ন পে-স্কেল দেওয়া হয়। গত তিন বছর ধরে আইন না থাকায় সাহিত্য শাসিত প্রতিষ্ঠান গুলোর কেটে ফেললেও আইনি কোনো কথা ছিল না।
সরকারি চাকরি আইন কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়ার পরই অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আইডি সংশোধনের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আইন সংশোধনের লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ত্রুটিপূর্ণ ধারাগুলো সংশোধন করা হয়। এতে কাটবে অভিন্ন প্যাসকেলের জটিলতা।
সরকারি চাকরির আইনটির নাম পরিবর্তন হয় চারবার সাংবিধানিক অঙ্গীকার “সিভিল সার্ভিস আইন“ কোন সরকার বাস্তবায়ন করেনি। ২০০৩ সালে প্রথম আইনটি ঘোষণা করে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার। তখন খসড়া আইনটি নাম ছিল “ সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট“ পরের তত্তাবোধক সরকারের সময়েও অধ্যাদেশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়।২০০৭ সালে প্রথম ইউএনডিপির সহায়তায় “সরকারি চাকরি অ্যাক্ট“ নামে খসড়া তৈরি করা হয়। কিন্তু ওই অ্যাক্ট ও আলোর মুখ দেখেনি। গেজেট জারি হওয়া আগেও একবার নাম পরিবর্তন করা হয়। সর্বশেষ সরকারি চাকরি আইন এর পরিবর্তে এর নাম দেওয়া হয় ‘সরকারি চাকরি আইন‘।
সরকারি চাকরির সংশোধনের আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন
সরকারি, আধা-সরকারি, সাহিত্য শাসিত ও স্থানীয় সরকার বিভাগের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে (ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ) নিজেদের মতো বেতন কাঠামো নির্ধারণ এবং আর্থিক ব্যয় এর ক্ষেত্রে এখান থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে।
সোমবার ১২ ডিসেম্বর এবং বেসরকারি চাকরি সংশোধন আইন 2022 চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রীসভা।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম তিনি বলেন সরকারি চাকরির সংশোধন আইন 2022 আবার পাঠানো হবে। এর আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগ হাতে ছিলG কিন্তু এখন আবার সাহিত্য শাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়টিও একই বিভাগের অধীন নিয়ে আসা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান গুলোর বেতন-ভাতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
তবে সরকারি চাকরিজীবীদের গ্রেফতারের পূর্বানুমতির বিষয়ে এবারে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
আইন করার জন্য ২০১৮ পর্যন্ত এই প্রকল্পটি চলেছে। এই প্রকল্প তে মোট খরচ হয়েছে ৫৭ কোটি টাকা। এর বেশিরভাগ অর্থই কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, সভা ও সেমিনার খরচ করা হয়। কিন্তু বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় তা আবার সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
COMMENTS