সোনার দাম ভরিতে পাঁচ হাজার টাকা দাম বেড়েছে ২০২৩ সোনার দাম ছুটছে পাগলা ঘোড়ার মত। চলতি বছরের প্রথম ২ সপ্তাহে ভরিতে পাঁচ হাজার টাকা দাম বেড়...
সোনার দাম ছুটছে পাগলা ঘোড়ার মত। চলতি বছরের প্রথম ২ সপ্তাহে ভরিতে পাঁচ হাজার টাকা দাম বেড়েছে। আবার সাড়ে ছয় হাজার টাকা বাড়লে লাখ টাকার ছবি দামি এই ধাতু। পাগলা ঘোড়ার মত হু হু করে দাম বাড়তে থাকা যারা অলংকার তৈরি পরিকল্পনা করেছিলেন, তারা পড়েছেন মহা দুশ্চিন্তায়। জুয়েলার্স ব্যবসায়ীরাও ক্রেতার দেখা পাচ্ছে না, তবে সোনার তৈরি পুরনো অলংকার যাদের সিন্দুকে রয়েছে, তারা আছেন ফুরফুরে। হিসাব করেছেন বেঁচে দিলে দাম কেমন মিলবে, আবার মনের মধ্যে প্রশ্ন আসছে, দাম কি আরো বাড়বে? তাহলে আপাতত বিক্রি না করাই ভালো।
সোনার দাম কি আবার বাড়বে?। কিনা, সেটি এখনই নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই। তবে সোনার দামের সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তার মানের সোনাই সুভাগা। যত বেশি মূল্য স্থিতি তত বেশি সোনার মূল্য বৃদ্ধি। ঐতিহাসিক ভাবেও দেখা গেছে উচ্চমূল্য স্থিতির সময়ে সোনার দাম সবচেয়ে বেশি বারে। করুণার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অর্থাৎ ২০২০ সালের আগস্ট এর প্রথম সপ্তাহে বিশ্ব বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৭০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে যা এখন পর্যন্ত ইতিহাসের সর্বোচ্চ।
প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সোনার ভরি সর্বোচ্চ মূল্য ২২ ক্যারেট
১৯৭০= ১৫৪
১৯৭৫= ১,১০০
১৯৮০= ৩,৭৫০
১৯৮৫= ৪,৭৫০
১৯৯০= ৬,৫০০
১৯৯৫= ৬,৯৬৫
২০০০= ৬,৯০০
২০০৫= ১৩,৮৩৩
২০১০= ৪২,১৬৫
২০১৫= ৪৩,০১৪
২০২০= ৬৯,৮৬
২০২১ = ৭৭,২১৬
২০২২ গত দুই বছরে সোনার ভরির সর্বোচ্চ মূল্য ৮৮,৪১৩
২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি সোনার দামের উত্থান ৯৩,৪২৯ এখন পর্যন্ত।
দেশের সোনার বার্ষিক চাহিদা = ২০-৪০ টন।
জোগান আসে যেভাবে = ২ - ৪ টন পুরানো অলংকারের মাধ্যমে।
বৈধ অবৈধ পথে আমদানি = ১৮ - ৩৬ টন।
তারপরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের উথান পতনের মধ্যেই ছিল সোনার দাম। গত বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের রাশিয়া ইউকোরআন যুদ্ধ শুরু হয়। বিশ্ব অর্থনীতি নতুন করে ঝুঁকির মধ্য পড়ে। দেশে দেশে মূল্য স্থিতি রেকর্ড হতে থাকে। তখন সোনার দাম পাল্লা দিয়ে বাড়ে। গত বছরের ৮ মার্চ বিশ্ববাজারে দাম দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। তারপর অবশ্য কমতে থাকে। অক্টোবরে এক হাজার ৬৫০ ডলারের নামে। বছরের শেষ দিকে আবার দাম উদ্দামুখী হয়। সর্বশেষ গত শুক্রবার এর দাম ১৫২০ ডলারে পৌঁছালে। মূলত রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর বৈশ্বিক অর্থনীতি মন্দার আশঙ্কায় মানুষ সোনাই বিনিয়োগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তবে মূল্য স্থিতির নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রেজাল্ট বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুধার বৃদ্ধি করে। তখন সোনা থেকে অর্থ তুলে বন্ডে বিনিয়োগ সরিয়ে নিন বিনিয়োগকারীরা। এখন ঘটেছে ঠিক তার উল্টো্ টানা কয়েক মাস বৃদ্ধির কারণে, আগের মত গতি আর না থাকার সম্ভাবনা বেশি। সেজন্য বিনিয়োগকারীরা বন থেকে সোনাই ফিরেছে। তার ফলে সোনার চাহিদা আরও দাম দুটোই বাড়ছে। বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়লো দেশে ও দাম বাড়ে। আর দাম বাড়ানোর সেই কাজটি করে থাকে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি বা বাজুস। গত ডিসেম্বরের শুরুতে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট ১ ভরি ১১.৬৪ গ্রাম সোনার দাম ছিল ৮৪২১৪ টাকা। তারপর চার দফা ভরিতে বেড়েছে ৯২১৫ টাকা গত রোববার প্রতি ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা ভরি এটি দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ দাম।
বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতীয় সোনার দামের রেকর্ড হয়েছে, গত শুক্রবার দেশটিতে ১০ গ্রাম পাকা সোনা 24 ক্যারেট দাম ৫৬ হাজার ২৪৫ সুপিতে ওঠে, আর ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়ায় 517720 রুপিস, তার মানে এক ভরিতে ১১.৬৪ গ্রাম দাঁড়াবে ৬০ হাজার ৩২৬ রুপি।
সোনার দামের পাশাপাশি চাহিদা জোগানের বিষয়ে কিছুটা ধারণা নেওয়া যাক। শোনার চাহিদা মূলত দুভাগে তৈরি হয়, যেমন গহনার চাহিদা ও শুনায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি, গহনা হিসেবে সোনার বেশি ব্যবহার হয় চীন ও ভারতে। পশ্চিমা দেশগুলোয়ও গহনার ভালো চাহিদা রয়েছে, চাহিদামত সরবরাহ নিশ্চিত হয় দুইভাবে খনি থেকে উত্তোলন এবং পুরনো সোনা বিক্রি করে। যদিও অন্য খনি থেকে সোনার উত্তোলন একটি চলমান প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক গোল্ড কাউন্সিলের হিসেবে, গত 2021 সালে খনি থেকে ৩৫৭০ টন সোনা ।
একুরেট ভাবে হিসাব না থাকলেও দেশে বছরে প্রায় ২০-৪০ টন শোনার চাহিদা রয়েছে। তার মাত্র দশ শতাংশ চাহিদা পূরণ করা হয় পুরানো অলংকার দিয়ে। তার মানে বাকিটা ব্যাগে ঝুলের আওতায় বিদেশ থেকে আসে। অবৈধভাবে ও বিপুল শোনা আসে। তাই সোনার বাজার ও জুয়েলারি ব্যবসায়ী স্বচ্ছতা ফেরাতে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক সহ ১৯ টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। শুরুতে কিছু আমদানি হলেও পরে তা স্থবীর হয়ে পড়ে।
পুরনো অলংকারের মুনাফা পুরনো অলংকার বিক্রি করলে মুনাফা কত বাংলাদেশের যে বছর স্বাধীন হয় তার আগের বছর সোনার বড়ি ছিল ১৪৫ টাকা বর্তমানে দাম ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা। তার মানে এখন চিন্তা করে দেখেন কতটা ডিফারেন্স হয়েছে।
COMMENTS